নিজস্ব প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ বাংলাদেশের কক্সবাজার ও উত্তর-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। রবিবার সকালের দিকে উপকূল অতিক্রম শুরু করে এ ঘূর্ণিঝড়। সবশেষ তথ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মোখা মূল আঘাত হানবে মিয়ানমারের ওপর। যে কারণে বাংলাদেশের জন্য অনেকটাই ঝুঁকি কেটে গেছে।
রবিবার বেলা সোয়া ১১টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, সাইক্লোন আই (ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র) টেকনাফের ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরবর্তী অঞ্চল দিয়ে অতিক্রম করায় বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে ঝুঁকি কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফ এলাকায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা বৃষ্টিপাত হতে পারে।
আজিজুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মূল ঝুঁকিটা চলে যাবে মিয়ানমার অঞ্চল দিয়ে। টেকনাফ, কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের অঞ্চলগুলো ঝুঁকিমুক্ত হতে চলেছে। এর ফলে শুরু থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে আমাদের যে ঝুঁকির সম্ভাবনা ছিল, এখন আর ততটা ঝুঁকি নেই।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পিক আওয়ার হবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা। এসময়ে দ্রুত বেগে জলোচ্ছ্বাস প্রবাহিত হবে। তখন ঘণ্টায় ১২০-১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া হতে পারে, যা বর্তমানে (সাড়ে দশটায়) রয়েছে ৬০ কিলোমিটার পার আওয়ার।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আরও বলেন, বিকেল নাগাদ ঘূর্ণিঝড় মোখা আমাদের অতিক্রম করে গেলেও এর প্রভাব থেকে যাবে আরও দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত। আর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হবে টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপে। আমরা আশঙ্কা করছি জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা যদি ৮ থেকে ১২ ফিট পর্যন্ত হয়, তাহলে টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিনে অস্থায়ীভাবে পানির জলাবদ্ধতা থাকবে। তবে পর্যায়ক্রমে তা কেটে যাবে।
এর আগে, বেলা ১১টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৯ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিকেল ৩টার মধ্যে এটি আঘাত হানতে পারে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় মোখা সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল ৩টার মধ্যে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাজধানী সিটওয়ের কাছ দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।
সম্পাদক
ও প্রকাশক : মোঃ আজির উদ্দিন সেলিম