ফৌজি হাসান খান রিকু
মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মা সেতু এলাকার আশে পাশে ও পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ বালু কাটার প্রতিবাদে নৌ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপিকা সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলির নেতৃত্বে পদ্মা নদীতে এই নৌ র্যালি করা হয়।
সোমবার (২৯ মে) সকাল ১০ টায় লৌহজং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ের সামনে থেকে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি ট্রলার নিয়ে পদ্মার বিভিন্ন পয়েন্টে বালু কাটার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ এ র্যালিতে অংশগ্রহন করে। এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন ইংলিশ চ্যানেল বিজয়ী সাতারু মোশারফ হোসেন খান, লৌহজং সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজ্জামেল হক, জেলা পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম মৃধা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন তপন, লৌহজং উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, অবারিত বাংলার নির্বাহী পরিচালক খান নজরুল ইসলাম হান্নানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
মুন্সীগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি বলেন, লৌহজং ও টঙ্গীবাড়িকে রক্ষায় সরকার ৪৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। কিন্তু কিছু লোকের সুবিধায় পদ্মায় অবৈধভাবে বালু কাটা হচ্ছে। এতে এ বছর বর্ষা শুরুর প্রক্কালেই পদ্মায় আবারো ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু লোকের ব্যক্তি স্বার্থেও জন্য আমার এলাকাবাসী ঘর ও বাস্তু হারা হবে তা কখনই মেনে নেওয়া যায়না।
তিনি আরো বলেন, সরকারের এ কোটি কোটি টাকার প্রকল্প, এগুলোকেও ধ্বংস হতে দেওয়া যায় না। বালু লুটেরাদেরকে এখনই দমন করা হবে। এর প্রতিবাদে আজ নৌ র্যালিতে অংশ নিয়েছি। এর পরেও যদি অবৈধ এই বালু লুটেরা বালু কাটা বন্ধ না করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অবারিত বাংলার নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান হান্নান জানান, পদ্মার অব্যাহত ভাঙ্গনে লৌহজংয়ের এক তৃতীয়াংশ পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। লৌহজং উপজেলার ৪০টি গ্রাম,স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, থানা, উপজেলা পরিষদ, খাদ্যগুদাম, ঐতিহ্যবাহী দিঘিলী বাজার, স্কুল, মসজিদসহ অসংখ্য সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এখন পদ্মার পেটে। দীর্ঘ চেষ্টার পর সরকার পদ্মা সেতুর বাম তীরে স্থায়ী বাঁধের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে অবৈধ বালু লুটেরা হুমড়ি খেয়ে পরছে পদ্মায়। এদের দমন করা না গেলে আমাদের বাপ দাদার ভিটেমাটি হুমকির মধ্যে থেকেই যায়।
লৌহজং উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান খান সাজু বলেন, পদ্মায় এসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের দমন করা মূলতঃ নৌ মন্ত্রণালয়, নৌপুলিশ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পদ্মা সেতু রক্ষার্থে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দেখা গেছে তাদের চেষ্টা থাকা সত্বেও এদের দমনে ব্যর্থ হচ্ছে। যার কারণে মাননীয় এমপি সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি আপার নেতৃত্বে বাধ্য হয়ে স্থানীয় জনগণদের সাথে নিয়ে এসব বালু দস্যুদের দমনে এই নৌ র্যালির আয়োজন। ততদিন পর্যন্ত এই কার্যক্রম চালু থাকবে যতদিন না এসব অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের উৎখাত করা না যায়।
স্থানীয় সাধারণ জনগণ বলেন, এমপি মহোদয়ের এ উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে এই নৌ র্যালি যেন নৌ ভ্রমণ না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। বালু দস্যুদের দমন ও বাপ দাদার ভিটেমাটি রক্ষায় এধরণের কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।#