স্টাফ রিপোর্টারঃ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সর্বত্র হাট বাজারে মৌসুমী ফল লিচুর সরবরাহ বেড়েছে। সেইসাথে ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারনায় ফলের বাজার থেকে শুরু করে রাস্তার মোড়, ফুটপাত, আর জনগুরুত্ব জায়গা জমজমাট হয়ে উঠছে। বিক্রিতে শামিল হয়েছে চাষি পাইকার আর স্থানীয় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। তবে এ মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে বাগানে লিচুর ফলন অন্যান্য বছর থেকে কিছুটা কম হলে ও দাম ভালো পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। চাষিরা জানায়, গত ১০ দিন ধরে চলছে লিচু বিক্রি। প্রতি একশ লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩শ টাকায়। শুরু থেকে এখন লিচুর ভালো চাহিদা রয়েছে।
উপজেলার আজমপুরের খোরশেদ আলম বলেন, তার ৩০টি লিচু গাছ রয়েছে। এ বছর ফলন কম হওয়ায় তিনি অনেকটাই দু:শ্চিন্তায় ছিলেন। তিনি বলেন চলছে তার বাগানের লিচু বিক্রি। গত ১ সপ্তাহে ১৮ হাজার টাকার লিচু বিক্রি করেন। বাজারে লিচুর ভালো চাহিদা থাকায় এখন আর পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন না। নিজেই বাগান থেকে পেরে বাজারে বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, এখন পযর্ন্ত যে দামে লিচু বিক্রি হচ্ছে তবে ফলন কম হলে ও লাভের পরিমাণ বেশী হওয়ার আশা করছেন। তার বাগানে পাটনাই মাদ্রাজি, চাইনা জাতের লিচু রয়েছে।
এদিকে উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের শতাধিক চাষী লিচু চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতি উন্নয়নে যতেষ্ট ভূমিকা রাখছে। চাষী মো: মুর্শেদ মিয়া বলেন, তার ২টি বাগানে ৪০টি লিচু গাছ আছে। তবে এ বছর আবহাওয়াজনিত কারণে তুলনামূলক লিচু ফলন কম এসেছে। বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় পাইকারের কাছে বিক্রির পাশাপাশি এখন নিজেও বিক্রি করছেন। এ পযর্ন্ত তিনি ২২ হাজার টাকা লিচু বিক্রি করেছেন বলে জানায়। গত বছর এ বাগান থেকে ৯০ লাখ টাকার উপর লিচু বিক্রি হয়েছে। এবার নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে ও অন্যান্য খরচ বাদ তার চাইতে বেশী লাভ হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন। ক্রেতা আলমগীর হোসেন বলেন, তার ছেলে ও মেয়ে লিচু খাওয়ার কথা বললে তিনি ১শ লিচু ২৮০ টাকা দিয়ে কেনেন। তিনি বলেন, এখানকার লিচু খুবই ভালো দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও খুব সুস্বাদু, এর ভেতরে মাংস বেশি এবং বিচি ছোট রয়েছে। পাইকার মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে তিনি মৌসুমি লিচু বিক্রি করছেন। এখানকার লিচু মিষ্টি ও রসালো হওয়ায় এ মৌসুমে তিনি ৩ টি বাগান ইজারা নিয়েছেন। দৈনিক তিনি ৮ হাজারের উপর লিচু বিক্রি করছেন বাজারে লিচুর যে চাহিদা রয়েছে এবং বিক্রিতে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হবেন বলে জানায়।
ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, প্রতিদিন ভোরে বাগান থেকে লিচু ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করছেন। চাহিদানুযায়ী মালিকরা লিচু আমাদেরকে দিচ্ছেন না। তাছাড়া বিক্রিও বেশী দামে করছেন। এবার দাম বেশী হলেও ভালো চাহিদা রয়েছে। প্রতিদিন ৩ হাজারের উপর লিচু বিক্রি করছেন।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ আবহাওয়ার কারণে লিচুর কিছু ক্ষতি হলে ও শেষ পযর্ন্ত ফলন ফলন ভালো হয়েছে।