রাজশাহী প্রতিনিধি:
আসন্ন ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে ইতোমধ্যে যাচাই বাছাই শেষে গত ২ জুন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।প্রতীক বরাদ্দের পর তাঁদের সমর্থকেরা মিছিল করেন। এছাড়া ওয়ার্ডে পোস্টার ও ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু হয়।প্রতিক বরাদ্দ পেয়ে প্রতিক্রিয়ায় সব প্রার্থীই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে মন্তব্য করেন।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনে (রাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার (৩ জুন) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিরোইল কলোনিতে এই ঘটনা ঘটে। ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বর্তমান কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন ও কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ বাবুর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। তবে ১৯ নং ওয়ার্ডে এক কাউন্সিলর প্রার্থী’র বিরুদ্ধে সংঘর্ষ সৃষ্টি ও চেম্বার ভাংচুরসহ হাতিহাতির ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ৩ জুন (শনিবার) রাসিকের ১৯ নং ওয়ার্ডের ১ নং ও ৩ নং গলিসহ বড়মসজিদ মোড়ে এঘটনা ঘটে বলে প্রত্যাক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে জানা গেছে। এ ঘটনায় দুপক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।আশরাফ বাবু’র সমর্থকরা কাউন্সিলর প্রার্থী তৌহিদুল হক সুমনের চেম্বারসহ তাঁর সমর্থকের বাসায় হামলা ও ভাংচুর করেছেন।
ঘটনার স্থানে গিয়ে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন গণমাধ্যম কর্মীরাও। বাধা দিয়েছেন কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ বাবু ও তাঁর সমর্থকরা। উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন।
গণমাধ্যমের সাক্ষাৎতে কাউন্সিলর তৌহিদুল হক সুমন বলেন, গত এক বছর ধরে আশরাফ বাবু’র গুন্ডাবাহিনী কর্তৃক ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে অব্যাহত হুমকি ধামকি ও নানা প্রোপাগাণ্ডা শিকার হয়ে আসছি। এরই ধারাবাহিকতায় ওয়ার্ডে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়ে, আমার কর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রসহ হামলা চালানো হচ্ছে। গত ৩ জুন নৌকা’র নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা অংশ হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করছিলাম। এ সময় আমার অনুপস্থিতিতে আমার দুই কর্মী’র উপর হামলা চালায় আশরাফ বাবু ও তাঁর সমর্থকরা। তাঁরা আমার নির্বাচনী অনেকগুলো ক্যাম্প ও ব্যানার ফেস্টুন ছিড়ে ফেলেন। ওয়ার্ডে সংন্ত্রাসী কায়দায় দেশীও অস্ত্রষস্ত্র সজ্জিত গুন্ডাবাহিনী দ্বারা ১ নং গলি থেকে রেলমাঠ পর্যন্ত ভয়ংকর ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করেন। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে আমার কাউন্সিলর অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। তিনি আরও বলেন, ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ওয়ার্ডবাসীর পাশে থেকে নাগরিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছি। ওয়ার্ডবাসী এখন উন্নয়নের সঙ্গে আছে। এটা দেখে প্রতিপক্ষ আশরাফ বাবু ভয় পেয়েছেন। তিনি ঋণে জর্জরিত, কিছু নারী সমর্থকদের টাকা দেওয়ার কথা বলে তাঁর প্রচার মিছিলে এনেছিলেন। সেই টাকা তাদের না দিয়ে বা যাতে দিতে না হয়, সেজন্য তিনি গত ৩ জুন, তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি’র চেষ্টা করেন। নিজেই নিজের হাত কেটে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ছড়ানোর চেষ্টা করেন। আমি এ ঘটনায় তৎক্ষনাৎ দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত রিটানিং কর্মকর্তাকে ফোনে জানিয়েছি। পরে লিখিত অভিযোগ করেছি। থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ বরাবরই নীরব ভুমিকা পালন করেছে।
এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানা পুলিশ বলছে, পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে কাউন্সিলর প্রার্থীসহ অন্যদের ওপর হামলা চালানো হয়। সেখানে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নাম ও পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার পরপরই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছিলো।এছাড়াও দুই পক্ষের মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী আশরাফ বাবুর বক্তব্য নেওয়ার জন্য মোবাইলে ফোন দিলে, তিনি ফোন রিসিভ করেননি।