হুমায়ূন কবীর ফরীদি, স্টাফ রিপোর্টারঃ
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন জগন্নাথপুরের কামার পল্লীর পরিশ্রমী কামার পল্লীরা। যতই ঈদের দিন ঘনিয়ে আসছে ততই ক্রেতা সাধারনের ভীড় বাড়ছে কামার পল্লীতে। বিগত বছরের তুলনায় চলতি বছর ভালই বিক্রি হচ্ছে পশু জবাই'র দা, ছুরি ও ছাপাতি ইত্যাদি।
আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকী। ২৯ শে জুন রোজ বৃহস্পতিবার মুসলিম উম্মাহ'র প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা। এই ঈদকে ঘিরে মানুষের ভীড়ে আর হাতুড়ি আর ছেনির টুংটাং শব্দে সরগরম হয়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা সদর বাজার সহ বিভিন্ন হাটবাজার এর কামার পল্লী। কোরবানির পশু জবাই এর সর্ঞ্জাম তৈরীতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। ধম ফেলার ফুরসৎ নেই বললেই চলে তাদের। ২৪ শে জুন রোজ শনিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ও জানাযায়, অন্যান্য বছর গুলোর ন্যায় এই ঈদে আল্লাহ'র সন্তুষ্টি লাভে জামাতের সহিত নামাজ আদায় এর পাশা-পাশি নামাজ শেষে বাড়ীতে ফিরে তৌফিক অনুযায়ী পশু জবাই করে আত্মীয় - স্বজন সহ হত-দরিদ্র মানুষের মাঝে মাংস বিতরণ করবেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বিত্তশালী ধর্মপ্রাণ মুসলমান। আর এই পশু জবাই এর সর্ঞ্জাম অর্থাৎ নতুন দা,ছুরি ও চাপাতি ইত্যাদি ক্রয় করার পাশা-পাশি পশু জবাই'র পুরাতন সরঞ্জাম সান (দাড়) দিতে উপজেলা সদর জগন্নাথপুর বাজার সহ কলকলিয়া বাজার, রসুলগঞ্জ বাজার ও রানীগঞ্জ বাজার সহ ছোট-বড় বিভিন্ন হাট-বাজার এর কামার পল্লীতে ভীড় করছেন মানুষ-জন। এতে করে কর্মব্যাস্ত সময় পার করছেন কামার শিল্পীরা। নৈপুণ্য হাতের কারিসমায় ক্রেতা সাধারনের অর্ডার অনুযায়ী কোরবানির সরঞ্জাম তৈরী করে বিক্রি করছেন তারা। ধম ফেলার ফুরসৎ নেই তাদের। তাই মালামাল বিক্রির জন্য আলাদা লোকও রেখেছেন তারা।
এ ব্যাপারে কামার পল্লীতে আসা ক্রেতা সাহেল শামীনুর ও নুরুজ্জামান সহ একাধিক ক্রেতা একান্ত আলাপকালে বলেন, কোরবানি দিব তাই কিছু নতুন দা,ছুরি ও চাপাতি ক্রয় করার পাশাপাশি পুরতান দা,ছুরি সান দিয়ে নিলাম। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, আল্লাহর হুকুম আদায়ে তৌফিক মাফিক কোরবানি দেব। কবুলের মালিক আল্লাহ। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, সহনশীল মূল্যে কামার শিল্পীরা এই সকল সরঞ্জাম বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে একান্ত আলাপকালে অদ্বৈত কর্মকার, সুশীল কর্মকার ও সেবক কর্মকার বলেন, সারা বছরই কাজকর্ম কমিবেশী কিছুটা থাকে। কোরবানির ঈদ আসায় ব্যস্ততা বহুগুন বেড়ে গেছে। আগে সকাল ৯/১০ টার সময় দোকান খোলা হতো। আর সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলেই বন্ধ থাকতো। এখন সকাল ৮ টা থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত কর্মযজ্ঞ চলছে। ঈদের আগের রাতেও কাজ করতে হয়। তাই এই সময়টাতে বড় অংকের ইনকাম সবারই হয়। নিজে কাজ করে ধম ফেলার ফুরসৎ পাচ্ছিনা। তাই মালামাল বিক্রির জন্য আলাদা লোকও রেখেছি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, আগে প্রতি বস্তা কয়লা একশত/দুই শত টাকায় ক্রয় করা যেত। অথচ বর্তমানে এক বস্তা কয়লা কিনতে হাজর পনেরো শত টাকা গুনতে হচ্ছে। তবে ঈদ মৌসুমকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিটি ছোট-বড় ছুরি,দা ও চাপাতি ধারালো করায় জন্য ৩০ থেকে ৫০ টাকা নিচ্ছি। আর নতুন বটি (দা) ক্রেতাদের নিকট ওজন বেদে ৩ শত টাকা থেকে ৫ শত টাকা, চাপাতি ১ হাজার টাকা থেকে ৩শত টাকা ও চাপাতি ৫ শত টাকা থেকে ৮ শত টাকা মূল্যে বিক্রি করছি। বেচা বিক্রি ভালোই হচ্ছে।
সম্পাদক
ও প্রকাশক : মোঃ আজির উদ্দিন সেলিম