রবি মিয়া ধর্মপাশা( সুনামগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি (ম্যানেজিং কমিটি) গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে গত রবিবার বিকেলে ওই বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকবৃন্দ ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগ, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সেলবরষ ইউনিয়নের সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির মেয়াদ আড়াই বছর আগে শেষ হয়েছে। এই বিদ্যালয়টিতে ২০৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। নতুন করে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার জন্য চলতি বছরের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক, গণ্যমাম্যন ব্ক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অভিভাবক ক্যাটাগরির চারজন সদস্য মনোনীতকরণ ও অন্যান্য ক্যাটাগরির সদস্য পদ নিয়ে মতবিরোধ থাকায় ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা যায়নি। এ অবস্থায় ওই বিদ্যালয়টিতে চলতি বছরের ১৯জুন চার সদস্য বিশিষ্ট একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী, এডহক কমিটি ওই বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার কথা। কিন্তু তা না করে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মাধবী রানী দে একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে পড়ে ওই মহলটির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে তিনি বিদ্যালয়টির স্ক্যাচ ম্যাপ এলাকার মাইজবাড়ী, বীর দক্ষিণ পূর্বপাড়া, বীর দক্ষিণ পশ্চিমপাড়া ও বীর দক্ষিণ প্রচারপাড়া গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সকল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের অবগত না করে বিধিবহির্ভূতভাবে একটি পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন। গত ১৭জুলাই প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত এই কমিটি অনুমোদনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়। যা ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নীতিমালার সম্পূরণ পরিপন্থী।
সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক মাইজবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা মো. রাসেল ও বীর দক্ষিণ পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হাবিল,রবুচান, রাজমুল বলেন, আমাদের কে না জানিয়ে বিধিবহির্ভূত ভাবে একটি মহলের চাপে পড়ে আমাদের বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করেছেন বলে শুনেছি। বেআইনিভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠন করায় আমরা এনিয়ে ইউএনও স্যারের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।
সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাধবী রানী দে বলেন, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেদের নিয়ে সভা করে একটি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করে তা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দিয়েছি। কারও চাপে পড়ে নয়। সরকারি বরাদ্দকৃত টাকা যাতে ফেরত না যায় সেজন্য বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়নের জন্য আমাদের বিদ্যালয়ে একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি থাকলেতো ওই এডহক কমিটিই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করার কথা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি টিও স্যারের ( উপজেলা শিক্ষা কর্মক র্তার) মৌখিক নির্দেশে এমনটি করেছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র দাস বলেন, বিদ্যালয়ে এডহক কমিটি থাকলে বিধি অনুযায়ী ওই এডহক কমিটিই নতুন করে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করবে। আমি প্রধান শিক্ষককে যখন কমিটি গঠনের কথা বলেছিলাম তখন ওই বিদ্যালয়ে যে একটি এডহক কমিটি আছে সেটি আমার খেয়াল ছিল না। সেলবরষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি বিধিবহির্ভূতভাবে গঠন করা এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ আমি পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, এ সংক্রান্ত অভিযোগটি আমি পেয়েছি। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।