
আমিনুল ইসলাম, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে নারিকেল ও গুড়ের বাজারে লেগেছে উৎসবের রং। এ বছর উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার পিস নারিকেল বিক্রি হয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। প্রতিটি নারিকেল আকারভেদে বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৭০ টাকায়। দাম কিছুটা চড়া হলেও পূজার আনন্দে খুশি মনে নারিকেল কিনছেন ক্রেতারা।
ফুলবাড়ী উপজেলার পরিসংখ্যান তদন্তকারী মিথুন কুমার সরকার জানান, সর্বশেষ ২০২২ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী উপজেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ২৬,৫৮০ জন। তিনি বলেন, “দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নারিকেলের চাহিদা প্রতি বছর বেড়ে যায়। ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে ঘিরে এ ফল শুধু খাবার নয়, ভক্তির অংশও।”
পূজার কেনাকাটা করতে আসা স্থানীয় ব্যবসায়ী পলাশ কুমার দাস বাবলেন, “আমাদের কাছে নারিকেল শুধু ফল নয়, পূজার অপরিহার্য সামগ্রী। দাম একটু বেশি হলেও পূজার আনন্দে সেটা গায়ে লাগে না।”
গৃহিণী অর্পিতা রানী রায় বলেন, “প্রতিটি পূজায় নারিকেল দিয়ে পূজা শুরু করি। দাম একটু বেশি হলেও ভালো মানের নারিকেল পাওয়া যাচ্ছে, সেটাই আমাদের তৃপ্তি।”
আরেক ক্রেতা ফনিন্দ্রনাথ সরকার জানান, “বছরে এই এক সময়েই এত বেশি নারিকেলের চাহিদা হয়। তাই দাম নিয়ে খুব বেশি অভিযোগ করার সুযোগ নেই।”
ফুলবাড়ী বাজারের বিক্রেতা মো. রাশেদ ইসলাম বলেন, “চাহিদার তুলনায় সরবরাহ সীমিত হওয়ায় দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে আমরা চেষ্টা করেছি গ্রাহকদের ন্যায্যমূল্যে নারিকেল দিতে।”
আরেক বিক্রেতা তৈয়ব আলী বলেন, “এবার নারিকেলের সরবরাহ একটু কম হলেও বিক্রি খুব ভালো হচ্ছে। বাজারে যে ভিড় দেখছি, তাতে বোঝা যাচ্ছে পূজার আমেজ কতটা।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইসাহাক আলী বলেন, “দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে বাজারে কৃত্রিম সংকট বা অস্বাভাবিক দাম বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা প্রতিদিন বাজার মনিটর করেছি, যাতে ব্যবসায়ীরা সঠিক দামেই নারিকেল বিক্রি করে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সবাই যেন আনন্দের সাথে পূজা উদযাপন করতে পারে। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহযোগিতা থাকবে।”
স্থানীয় ক্রেতা–বিক্রেতাদের ব্যস্ততা আর প্রশাসনের তদারকির ফলে ফুলবাড়ীর নারিকেল বাজার এখন যেন এক উৎসবমুখর আঙিনা। পূজার আমেজে তাই ব্যবসায়ী ও ভক্তরা সমান আনন্দে মেতে উঠেছেন।##