স্টাফ রিপোর্টারঃ সাতক্ষীরায় ধানবোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শ্রমিক নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন নারীসহ ২২ জন।
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টায় তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা মহিলা কলেজের সামনে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের সাতক্ষীরা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শ্রমিকরা হলেন— সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি গ্রামের মো. মন্টু মিয়ার ছেলে মো. সুমন হোসেন (৩৫) ও একই উপজেলার জয়নগর গ্রামের মৃত মো. ওমর আলীর ছেলে মো. আবুল হোসেন (৪৬)।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা হলেন— সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি গ্রামের মো. হযরত আলীর ছেলে মো. ইয়াসিন আলী (১৯), সদর উপজেলার ধুলিহর গ্রামের মো. নেছার আলীর ছেলে মো. শুকুর আলী (৫০) ও একই উপজেলার কাশেমপুর গ্রামের মো. আব্দুল আলীর ছেলে মো. ইমন হোসেন (১৯)।
এছাড়া সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তাপশ কুমার দাশ (৪০), শাহিদুল ইসলাম (৩৫), মামুন হোসেন (২৩), মোঃ শাহিন (২১) ও শ্রমিকদের বাবুর্চী ফরিদা বেগম (৫০)। আহত আরও ৯ জনকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, হতাহতরা সবাই দিনমজুরের কাজ করতেন। তারা কৃষি শ্রমিক হিসেবে শরীয়তপুরে ধান কেটে পাওয়া ২৪৫ বস্তা ধানসহ সাতক্ষীরা ফিরছিলেন।
একটি ট্রাকে ধানের বস্তা রেখে তার ওপর ২৪ জন শ্রমিক কোমরে নেট দিয়ে নিজেদের বেঁধে রেখেছিলেন। পথে কুমিরা এলাকায় পৌছালে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশ্ববর্তী খাদে উল্টে পড়ে যায়। এ সময় শ্রমিকরা ঘুমন্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সুমন হোসেন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আবুল হোসেন।
সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণকারী আহত শ্রমিক তাপশ কুমার দাশ জানান, তারা ২৪ শ্রমিক সাতক্ষীরা থেকে ধান কাটার জন্য শরিয়তপুর গিয়েছিলেন। মজুরি হিসাবে পাওয়া ধান নিয়ে সোমবার দিন রাতে একটি পিকআপ ভাড়া করে তারা সাতক্ষীরায় আসছিলেন। কিন্তু গাড়িটি চালাচ্ছিল পিকআপের হেলপার। আমরা নিষেধ করার পরও তারা গুরুত্ব দেয়নি।
তিনি বলেন, পথিমধ্যে ভোর পৌনে ৫টার দিকে পাটকেলঘাটা থানাধীন সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের কুমিরা বাজারের কাছে পৌছালে চালক হেলপার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে পিকআপটি উল্টে রাস্তার পাশে খাদে পড়ে যায়। এতে আমরা ১৯ জনের মত শ্রমিক কমবেশি আহত হই। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার করে আমাদেরকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। হাসপাতালে আসার পর সুমন হোসেন মারা যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সোয়া ৮টার দিকে মারা যায় আবুল হোসেন। আহত আরও ৯ জনকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাশেদুজ্জামান সুমন জানান, আহত শ্রমিকদের হাসপাতালে আনার পর সুমন হোসেন মারা যায়। সকাল সোয়া ৮টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় আবুল হোসেন।