1. admin@dailyhumanrightsnews24.com : admin :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :

সিরাজগঞ্জে যমুনা থেকে বালু উত্তোলন, বিলীন হচ্ছে বসতভিটা

  • আপডেট সময় : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩
  • ২৬ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টারঃ          সিরাজগঞ্জে যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারনে নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা ও ফসলী জমি। ভাঙনের মুখে রয়েছে বহু স্থাপনা। বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে আসছে বর্ষায় সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা এলাকাবাসী। জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ পত্রে একথা উল্লেখ করা হয়েছে। এবিষয়ে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম রকিবুল হাসান বলেছেন, বালু মহালের এরিয়ার বাইরে কেউ বালু উত্তোলন করলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে ইজারা মহাল বাতিলও হতে পারে।

বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। গত ১৪ মে সদর উপজেলার ৮নং কাওয়াকোলা ইউনিয়নের দেড় শতাধিক বাসিন্দা স্বাক্ষরিত একটি পত্রে এই আবেদন করা হয়। বালু উত্তোলনের কারনে নদীর পাড় ভেঙে নদীতে বিলীন হচ্ছে। এছাড়া এই অঞ্চলের আবাদি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, মুজিবকেল্লা, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে বলে আবেদন পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।

যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা এলাকা  থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনে কারনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে যমুনা পাড়ের মানুষ। বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে চলতি বছরে বর্ষায় নদীর স্রোতে  কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বসতবাড়ি, ফসলী জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় এলাকাবাসী ইতিমধ্যে একাধিকবার মানববন্ধন করেছেন। তারপরও বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক বলেছেন ইজারাকৃত জায়গার বাইরে এসে বালু উত্তোলন করলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন যমুনা নদী বেষ্টিত এলাকা। প্রতিবছরই নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলী জমি। নদী ভাঙ্গনে ছোট হয়ে আসছে কাওয়াকোলা ইউনিয়ন। নদীতে ঘরবাড়ি ফসলী জমি হারিয়ে এলাকার অনেক পরিবার এখন নি:শ্ব। আবার নদীতে বিলীন হয়ে যাওয়া জমিতে চর জেগে ওঠায় অনেকেই চীনাবাদাম, বোরো ধান, তিল, গমসহ বিভিন্ন রবি ফসল আবাদ করে পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আবার অনেকে নদীভাঙনের কবলে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন। নদীতীরবর্তী মানুষের জমিতে চর জেগে ওঠায় কিছুটা হলেও তারা ওই জমি আবাদ করে রোজগার করছেন। কিন্তু বালু উত্তোলনের কারনে ভেঙে যাচ্ছে এসব ফসলী জমি।

এলাকাবাসী জানায়, গত ঈদুল ফিতরের আগে সদর উপজেলার জিয়ারপাড়া মৌজায় বালু মহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসক। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন জিয়ারপাড়া মৌজা থেকে বালু উত্তোলন না করে নদীর তীরবর্তী অঞ্চল কাওয়াকোলা ও দোগাছী মৌজা গ্রাম থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারনে বর্ষায় যমুনার তীব্র স্রোতে  কাওয়াকোলা ইউনিয়নের আবাদি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, কমিউনিটি ক্লিনিক, মুজিবকেল্লা, রাস্তাঘাট নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা  রয়েছে। তাই অতিদ্রুত অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধের দাবীতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

স্থানীয় শাহজামাল বলেন, আমার ধানের প্রজেক্ট ছিলো। সব নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর বন্যা বসত বাড়ি ভাঙ্গনের কারনে সরিয়ে নিয়েছি। এঅবস্থায় নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে বর্ষা মৌসুমে এলাকা ভেঙ্গে নদীতে চলে যাবে। মানুষ গৃহহারা হয়ে যাবে। নদীতে ভেঙ্গ যাবে ফসলী জমি। গত বছরও ভূট্রার আবাদ করেছি। আগামী বছর করতে পারবো কি না জানি না। যে ভাবে হোক বালু উত্তোলন বন্ধ করতে হবে।

সার্জেন্ট (অব.) এস.এম রফিকুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসক জিয়ারপাড়া বালু মহাল ইজারা  দিয়েছে। সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা কথা। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন ইজারাকৃত বালু মহালের বাইরে এসে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে বর্ষা মৌসুমে নদীতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেবে। মানুষের ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। তাই প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ কাওয়াকোলা এলাকা থেবে বালু উত্তোল বন্ধে জরূরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি,)  এস.এম রকিবুল হাসান বলেন, বালু মহালের এরিয়ার বাইরে কেউ বালু উত্তোলন করলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এক্ষেত্রে জেলা প্রশাসক স্যার শতভাগ ষ্টিক। খবর পেলে আমরা অভিযান করে সাথে সাথে জরিমানা করবো। প্রয়োজনে ইজারা মহাল বাতিলও হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০১৮ দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park