হুমায়ূন কবীর ফরীদি, স্টাফ রিপোর্টারঃ
জগন্নাথপুরের সর্ববৃহত নলুয়ার হাওর সহ ছোট-বড় সবকটি হাওরে সোনালী ফসল বোরোধান এর বাম্পার ফলন হয়েছে। সোনালী ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ চারদিকে চড়িয়ে পড়েছে। হাওরে ধান কাটা শুরু হলেও কৃষি যন্ত্র ও ধান কাটার শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ধান কাটার কৃষি যন্ত্র ও ধান কাটার শ্রমিক না থাকায় শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের আতঙ্কে আতঙ্কিত কৃষকেরা দুঃশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে বৈশাখী কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন।
২২ শে এপ্রিল রোজ সোমবার দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ও জানাযায়, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর সহ ছোট -বড় ২০ টি হাওরের ২০ হাজার ৩শত ৮৫ হেক্টর জমিতে পাকা সোনালী ও আধপাকা সবুজ ধানের শীষ মোলায়েম বাতাসের তালে তালে দুলছে। এই ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ চারদিকে চড়িয়ে পড়েছে। আর কৃষি যন্ত্র দিয়ে উচু জমিতে ধান কাটা গেলেও গত সপ্তাহে তিন দিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় নীচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে না। এই যন্ত্রের কারণে অন্যান্য বছরের মতো তুলনামূলক ভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ধান ধান কাটার শ্রমিক জগন্নাথপুরে আসেননি। অধিকাংশ কৃষক পরিবারের লোকজন নিয়ে প্রচন্ড তাপদাহকে উপেক্ষা করে ধীরগতিতে ধান কাটা, মাড়াই-ঝাড়াই, শুকানো সহ ঘোলায় তুলার কাজ করছেন। এমনকি ৭ শত থেকে ৮ শত টাকা মজুরী দিয়েও অনেক সময় ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। এক কথায় জগন্নাথপুরে ধান কাটার ধীর গতি। আবহাওয়ার যে অবস্থা এই রোদ্দুর্র এই বৃষ্টি। শিলাবৃষ্টি আর ঝড়ের আতঙ্কে আতঙ্কিত কৃষক কৃষাণী।
এব্যাপারে কৃষক জলিল,সাহেল,মমিন ও শহীদ সহ একাধিক কৃষক তাদের অভিপ্রায় ব্যাক্ত করতে গিয়ে বলেন, হাওরে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। গেল বছরের তুলনায় বেশী ফলন হবে বলে আশা করছেন। হাওরের সব ধান পেকে গেছে । ধান কাটাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বেশীরভাগ জমিতে কৃষি যন্ত্র দিয়ে ধান কাটা যাচ্ছে না। ধান কাটার শ্রমিক সংকট রয়েছে। এক প্রশ্নের তারা আরো বলেন, দেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে তুলনামূলক শ্রমিক না আসায় অধিক মুজরী দিয়ে অর্থাৎ ৭/৮ শত টাকা মজুরী দিয়ে স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে ধান কাটানো হচ্ছে। ধীর গতিতে ধান কাটা চলছে। আকাশের যে অবস্থা শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ের আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি সহিলামতে ধান গোলায় তুলতে পারব। বাদবাকি আল্লাহর ইচ্ছা।
এব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওছার আহমেদ বলেন, উপজেলার বৃহৎ নলুয়ার হাওর সহ ছোট বড় ২০ টি হাওরের ২০ হাজার ৩ শত ৮৫ হেক্টর জমি আবাদ করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ধান কাটার জন্য ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ হাজার কৃষি শ্রমিক ও ৭৫ টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি শ্রমিক সংকট দুর হবে। পরিবেশ অনুকূলে থাকলে ইনশাআল্লাহ ধান কৃষক -কৃষাণীর ঘোলায় উঠবে।