- ফৌজী খান রিকু
ঐতিহাসিক ৬ দফার ৬টি দাবি-
★১ম দফা
লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পাকিস্তান হবে একটি ফেডারেল রাষ্ট্র। তাতে পার্লামেন্টারি পদ্ধতির সরকার থাকবে, আইন সভাসমূহের সার্বভৌমত্ব থাকবে।
★২য় দফা
কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বে থাকবে কেবল প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক বিষয়। অবশিষ্ট সমস্ত বিষয় প্রাদেশিক সরকারের হাতে থাকবে।
★৩য় দফা
পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের জন্য দুটি সম্পূর্ণ পৃথক অথচ সহজে বিনিময়যোগ্য মুদ্রার প্রচলন করতে হবে।
★৪র্থ দফা
রাজস্ব ধার্য ও আদায়ের ক্ষমতা থাকবে প্রাদেশিক সরকারের হাতে।
★৫ম দফা
প্রতিটি প্রাদেশিক সরকারের বৈদেশিক বাণিজ্যের পৃথক পৃথক হিসাব রক্ষা করতে হবে।
★৬ষ্ঠ দফা
প্রাদেশিক সরকারকে একটি আধা-সামরিক বাহিনী গঠনের ক্ষমতা দিতে হবে।
১৯৬৬ সালের ৭ জুন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফা দাবির পক্ষে দেশব্যাপী তীব্র গণআন্দোলনের সূচনা হয়।
এই দিনে আওয়ামী লীগের ডাকা হরতালে টঙ্গি, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে পুলিশ ও ইপিআরের গুলিতে মনু মিয়া, শফিক ও শামসুল হকসহ ১১ জন শহীদ হন। আহত হন অনেকেই।
পাকিস্তান সরকারের বিরূপ প্রচারণা ও অত্যাচারে ৬ দফা আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ৬ দফা যখন জনগণের ব্যাপক সমর্থন পায় ঠিক সেই সময় আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবকে অভিযুক্ত করে এক নম্বর আসামি করা হয়। স্বৈরাচারী শাসকেরা ভেবেছিল মামলা দিয়ে তার রাজনৈতিক জীবন নিঃশেষ করে দেবেন। কিন্তু হলো তার বিপরীত। আগরতলা মামলা দায়েরের পর তিনি পরিণত হন মহানায়কে।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আপোষহীন সংগ্রামের ধারায় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পরাধীন বাঙালি জাতি এগিয়ে যায় মুক্তির সংগ্রামের দিকে। লাখো লাখো মানুষের আত্মত্যাগ ও প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
ছয় দফা আন্দোলন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সুচনাবিন্দু। নিজেদের অধিকার আদায়ের আদায়ের সংগ্রাম বাঙ্গালি জাতি অনেক আগে থেকেই করে আসছে। কিন্তু নিজেদের আত্মপরিচয়ের চাহিদা, এর জন্য সংগ্রামের প্রেরণা, নিজেদের স্বপ্নের বাস্তবিক কাঠামো বাঙ্গালি জাতি ছয় দফা থেকেই পেয়েছে। এই ছয় দফার প্রচারের ভয়ে ভীত হয়েই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসানো হয়েছিলো তাঁকে। ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছিলো এই ছয় দফার কারনেই। ছয় দফা আন্দোলন শেখ মুজিবকে করেছে ‘বঙ্গবন্ধু’।