স্টাফ রিপোর্টার :
দীর্ঘ চার বছর পলাতক থাকার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি মো. শহর আলীকে (৭৬) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
শুক্রবার (২ জুন) সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-২ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. ফজলুল হক।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় গ্রেফতার মো. শহর আলী ময়মনসিংহ এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছেন। সে সময় তিনি রাজাকার বাহিনীর অন্য সদস্যদের সঙ্গে অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২৩ মে রাতে মো. শহর আলীসহ ১৫ থেকে ১৬ জন সশস্ত্র রাজাকার ও ৫ থেকে ৬ জন পাকিস্তানি আর্মি নিয়ে ফুলপুর থানার মৈশাকান্দা গ্রামে সাধারণ মানুষ ও এলাকার সংখ্যা লঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন করে। সেদিন প্রায় ১০ থেকে ১২টি বাড়িতে লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। ১৯৭১ সালের ৪ আগস্ট ফুলপুর থানা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ও রাজাকার রজব আলী ফকিরের নেতৃত্বে শহর আলীসহ ২০ থেকে ২৫ জন সশস্ত্র রাজাকার পূর্ব ও পশ্চিম বাখাই এলাকার নিরহ মানুষের বাড়িতে লুটপাট করে। একই সঙ্গে ৯ থেকে ১০ জন বাঙালিকে কংশ নদীর শর্চাপুর ঘাটে নিয়ে গিয়ে গুলি করে হত্যা করে।
২০১৭ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ শহর আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে ছিলেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩১ মে গাজীপুরের শ্রীপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি মামলায় উল্লেখিত অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে গ্রেফতার এড়াতে বিভিন্ন স্থানে ছদ্মবেশে আত্মগোপনে থাকতেন তিনি।