1. admin@dailyhumanrightsnews24.com : admin :
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সিলেটে জাতীয় পার্টির বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্যালাইন বিতরণ পঞ্চগড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উদযাপন লোহাগড়া পৌর কার্য সহকারী কবির নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার দাবি এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ। জগন্নাথপুরে ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর জরাজীর্ণ, ময়লা আবর্জনার স্তূপ, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ বামনায় মুগডালের বাম্পার ফলন, ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক তীব্র গরমের মধ্যেই খুলল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হারিয়েছে এইচ এসসির মুল সনদ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর মুরাদ সিকদারের প্রতারনার শিকার প্রবাসী সহ অনেকে। বেকারত্ব দূরীকরণ ও মাদকমুক্ত স্মার্ট উপজেলা গড়বো টুঙ্গিপাড়ার জনসভায় মাসুদ গাজী লোহাগড়া পৌর কার্য সহকারী কবির নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার দাবি এনিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ।

Re: অধিকার বঞ্চিত হিজড়া সম্প্রদায়..

  • আপডেট সময় : মঙ্গলবার, ১৩ জুন, ২০২৩
  • ১৬১ বার পঠিত

দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ ডেস্কঃ              বর্তমান সমাজের পিছিয়ে পড়া সুবিধা বঞ্চিত একটি সম্প্রদায় হলো হিজড়া জনগোষ্ঠী। সভ‍্যসমাজ থেকে ছিটকে পড়া এই শ্রেণীটি প্রতিনিয়ত বিকৃত মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠছে। হিজড়াদের সামাজিক মর্যাদা অত্যন্ত শোচনীয়। উপমহাদেশে বহু বছর ধরে হিজড়াদের কোন স্বীকৃতি ছিল না। হিজড়ারাও মানুষ, সব ধরনের ইন্দ্রিয় অনুভূতি সাধারণ মানুষের মতো তাদেরও রয়েছে। পৃথিবীতে চার ধরনের হিজড়ার উপস্থিতি পাওয়া যায়। প্রথমত যারা দেখতে পুরুষের মত কিন্তু মানসিকভাবে নারী স্বভাবের তাদের অকুয়া বলা হয়, দ্বিতীয়ত, যারা দেখতে নারীর মতো কিন্তু পুরুষ স্বভাবের তাদেরকে বলা হয় জেনানা,তৃতীয়ত,তারা হচ্ছে উভয় লিঙ্গ বা লিঙ্গহীন আরবিতে যাকে খানসা মুশকিল বলে আর চতুর্থত যাদের যৌনক্ষমতা নষ্ট করে হিজড়া বানানো হয় তাদেরকে বলা হয় খোজা। হিজরারাও স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মানুষ। ২০১৪ সালের ভারতের সুপ্রিম কোর্ট হিজড়াদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ বলে স্বীকৃতি দেয়। হিজড়াদের বেশিরভাগই কিশোর বয়সে পরিবার ও সমাজের কটু দৃষ্টি ও তাড়া খেয়েই রাজধানীতে পাড়ি জমায়। তাদের অনেকে আবার পা বাড়ায় অপরাধ ও অন্ধকার জগতের দিকে। আজকের সমাজে রাষ্ট্র হিজড়াদের সামাজিক স্বীকৃতি ও বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার প্রদানে প্রস্তুত না থাকায় তারা মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পেতে চাঁদা তুলে,বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের সাথেও জড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশ সরকার ২০১৪ সালের ২৬ শে জানুয়ারি হিজড়াদেরকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। হিজড়াদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মিলেও অধরাই রয়ে গেছে তাদের বেঁচে থাকার অন্যান্য সুযোগ সুবিধাধী। এদেশে হিজড়াদের অধিকাংশই থাকেন ঢাকা শহরে। শুধু রাজধানীতেই এদের সংখ্যা 15 হাজারেরও বেশি। সাধারণ মানুষের কাছে হিজড়া মানেই বিরক্তি ও আতঙ্ক। শহরের চলাচল উপযোগী প্রায় সব জায়গায় তাদের দেখা মেলে।সমাজ তাদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যের দৃষ্টিতে দেখে তাদেরকে অনেক সময় মানুষই মনে করে না। তাদের চাওয়া-পাওয়া বা অধিকার সম্পর্কে দাবি-দাওয়ার তেমন কোন প্লাটফর্ম নেই। ফলে হিজড়াদের জীবন কাটে নীরবে,নিভৃতে। বিশ্বের বহু দেশে হিজড়ারা স্বাভাবিক জীবন যাপন করছে। তারা তাদের প্রাত্যহিক জীবনের চাহিদা মেটাতে বাংলাদেশের হিজড়াদের মত কারো করুণা বা অন্যের বিরক্তের কারণ হয় না বরং তারা তাদের দেশে আত্মনির্ভরশীল। ব্যবসা, রাজনীতি,শিক্ষা,চাকরি এমনকি বাহিরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে তৃতীয় লিঙ্গের অনেকেই কাজ করে থাকে। আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী দেশে হিজড়া জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬৬২৯ জন তবে বেসরকারি হিসাব মতে এই সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। আমাদের সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ১৫ এর (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হিজড়াদের জন্য অধিকারগুলো সুনিশ্চিত করা দরকার। মানুষ হিসেবে হিজড়াদের সামাজিক স্বীকৃতি ও মৌলিক অধিকারের প্রতিষ্ঠা এখন সময়ের দাবী। সামাজিকভাবে যথেষ্ট মর্যাদা না পাওয়ায় হিজড়ারা নিজেদেরকে ভিন্ন গ্রহের প্রাণী মনে করে যার ফলশ্রুতিতে সমাজবহির্ভূত বা অন্যায় সব কাজে তারা ঝুঁকে পড়ছে।  পরিবার ও সমাজ যখন তাদেরকে স্বাভাবিক চোখে দেখে না তখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা গুলো তাদের জন্য আপনা আপনিই বন্ধ হয়ে যায়। হিজড়াদেরকে সামাজিকভাবে গ্রহণ না করার ফলে তারা তাদের মৌলিক চাহিদা ও কর্মসংস্থান সহ নানা স্থানে বিড়ম্বনার শিকার হয়। সাম্প্রতিক সময়ে হিজড়াদের জীবনের উপর বেশ কিছু ফিল্ম ও ডকুমেন্টারি তৈরি হয়েছে। বেসরকারি পরিসংখ্যান মতে দেশে লক্ষাধিক হিজড়া রয়েছে। তারাও তো চায় তাদের শিক্ষার সুযোগ, যোগ্যতানুযায়ী কর্মের সুযোগ,তাদের অধিকার ও সুষ্ঠুভাবে বেচে থাকবার সুযোগ। তারাও ত চায় অন‍্য ৮-১০ জন মানুষের মত পরিবারের সাথে সমাজবদ্ধ হয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে জড়াতে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হিজড়ারা মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি পেলে সমাজের স্বীকৃত মানুষ হিসেবে বসবাস করার অধিকার পেলে তারা সমাজের গুরুত্বপূর্ণ কাজে অবদান রাখতে পারতো। তাদেরকে মানুষ তো দূরের কথা সমাজের এক শ্রেণীর লোকের কাছে তাদের দেখলেই এক ধরনের নাক ছিটকানো, লাঞ্ছনা,প্রবঞ্চনা তীব্র প্রতিচ্ছবি লক্ষ্য করা যায়। হিজড়ারা যেন ভিক্ষাবৃত্তি বা কোন ধরনের অপকর্মে না জড়ায় সেজন্য তাদেরকে তাদের যোগ্যতানুযায়ী কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে। হিজরাদের সমান অধিকার নিশ্চিতে সবার সম্মিলিত উদ্দ্যোগ প্রয়োজন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহায়তায় এ বিশাল জনগোষ্ঠীর দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করলে তাদের মেধা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে জনসম্পদে রূপান্তরিত করা যেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার ২০০৮ সালে হিজড়াদের ভোটাধিকার প্রদান করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে আইনের প্রয়োগ ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের মাধ্যমে এ বিশাল জনগোষ্ঠীর সামগ্রিক দৃশ্যপটে আমূল পরিবর্তন আনা সম্ভব। এমতাবস্থায় হিজড়া জনগোষ্ঠীকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ,প্রশিক্ষণ ও জীবনমান উন্নয়নে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি সুষ্ঠু তদারকির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন :
এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০১৮ দৈনিক মানবাধিকার সংবাদ
Theme Customized By Shakil IT Park